শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান প্রায় আট গুণ কমিয়ে দিয়েছে ভারত। বর্তমানে শুধু মেডিকেল ট্যুরিস্টদের ভিসা দিচ্ছে দেশটি। এতে দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্পর্কেও প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন ভারতীয় কূটনীতিকেরা।
আজ শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের আগে প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার বাংলাদেশিকে ভিসা দিত ভারত, কিন্তু বর্তমানে এই সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজারেরও নিচে।
কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণেই ভারতের এই ভিসা সীমিত করার নীতি, যার ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ভিসা দেওয়ার সংখ্যা কমানোয় দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কেও প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন অনেক কূটনীতিক। তাঁদের ভাষ্যমতে, থাইল্যান্ড কিংবা সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ব্যবস্থাও অনেক উন্নত। চাইলে সেসব দেশেও চিকিৎসার জন্য যেতে পারেন বাংলাদেশিরা। কিন্তু, তাঁদের প্রথম পছন্দ ভারত। কারণ এটি নয় যে, ভারত অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভালো মানের চিকিৎসা দেয়। আসল কারণ হচ্ছে, ভারত, বিশেষ করে কলকাতার সঙ্গে বাংলাদেশের ভাষা-সংস্কৃতির মিল রয়েছে।
অনেক কূটনীতিক বলছেন, ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের সাধারণ মানুষের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো পরস্পরের ভিসা। তাই এই ইস্যুতে একটি সমাধানে কীভাবে পৌঁছানো যায়, তা নিয়ে দুই দেশের তৎপরতা শুরু করা প্রয়োজন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে উত্তেজনা বেড়েছে। সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার ঘিরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে, যার জেরে আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে ভাঙচুর চালায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারতীয়রা। নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় দেশটি থেকে কূটনীতিক সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় ঢাকা।
তবে, গত ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের মাধ্যমে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল হতে শুরু করে। এ ছাড়া, কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার হিসেবে, কলকাতা ও আগরতলা মিশন থেকে প্রত্যাহার করা সহকারী হাইকমিশনারদেরও আবার তাঁর কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে ভারতে পাঠিয়েছে ঢাকা। আর কিছুদিনের মধ্যেই নয়াদিল্লিতে হাইকমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন রিয়াজ হামিদুল্লাহ।